আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ॥ ৫ আশ্বিন, ১৪৩১ ॥ ১৬ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

ভালুকা বনবিভাগের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লাকড়ি রেখে ট্রাক ও চালক হেলপারকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ
গ্রাম বাংলা প্রধান খবর শিরোনাম

ভালুকা বনবিভাগের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লাকড়ি রেখে ট্রাক ও চালক হেলপারকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ

প্রতিনিধি: মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ রিপোর্টার:
ডিসে ১৮, ২০২৩
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় ও ত্রিশালে অবস্থিত আকিজ পার্টিক্যাল বোর্ড কারখানায় সরবরাহকৃত লাকরির ট্রাক তল্লাশীর নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বনবিভাগের বিরুদ্ধে। এতে ভালুকা ও তার আশপাশের এলাকায় বনাঞ্চল উজাড় হয়ে হুমকীর মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
একাধিক অভিযোগে জানা যায়, পাশ্ববর্তী ত্রিশাল উপজেলার রায়মনি গ্রামে অবস্থিত গড়ে উঠা আকিজ বশির গ্র“পের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আকিজ পার্টিক্যাল বোর্ড কারখানাটি গড়ে উঠার পর এমনকি ভালুকা ও ত্রিশাল এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক লাইসেন্স বিহিন ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে। ফলে এক শ্রেণীর অসাধু লাকড়ি ব্যবসায়ী ভালুকা, শ্রীপুর, ত্রিশাল, গফরগাঁও, সখিপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন শতশত ট্রাক ভর্তি করে ও ভাটি এলাকা থেকে সীমান্তবর্তী সুতীয়া, খিরু ও বানার নদী পথে বিশাল বিশাল ট্রলারে করে লাকড়ি সরবরাহ করে আসছে। আর এই সুযোগে বনবিভাগের এক শ্রেণীর অসাধু লোক তল­াশীর নামে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।
জানা যায়, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার দু’টি রেঞ্জের আওতায় সংরতি বনাঞ্চল হতে সঙ্গবদ্ধ কাঠ পাঁচারকারীদল রাতের আঁধারে গাছ কেটে ট্রাক ভরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর প্রকাশ্যে ওই কারখানায় ও ইটভাটাগুলোতে ঘাটাইল সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে পাঁচার করছে শত শত টন লাকড়ি। আর এদিকে একাধিক চেকপোষ্ট বসিয়ে তল­াসির নামে বন বিভাগের লোকজন এসব অবৈধ চোরাই কাঠ বোঝাই ট্রাক আটকের পর জব্দ না করে কৌশলে পার্টি কিংবা চালকের সাথে সমজোতা করে মোটা অংকের টাকা আদায় করে ট্রাকগুলো ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর অনবরত বৃক্ষ নিধনের ফলে পশুপাখির আবাসস্থল নষ্ট হয়ে ক্রমশ এসব অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে আসা লাকড়ি ভর্তি ট্রাকটি (ঢাকা মেট্রো-ড-১১-৯০০৮) ভালুকা রেঞ্জের সিডষ্টোর চেকপোস্টে আটকিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লাকড়িগুলো রেখে চালক ও হেলপারসহ ট্রাকটি ছেড়ে দেয়। নাম প্রকাশ না করার সর্তে গাড়ির সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই লাকড়িগুলো এমদাদুল হক নামে আকিজ কারখারায় লাকড়ি সরবরাহকারী এক ব্যবসায়ীর। ট্রাকটি আটকানোর পর এমদাদুল হক ৫০ হাজার ও টাঈাইল জেলার সখিপুরের বাবু নামে ট্রাক মালিক তার নব ট্রেডার্স নামে ডাচবাংলার একাউন্ড থেকে আরো ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে মোট এক লাখ টাকা দিয়ে ট্রাক, চালক ও হেলপারকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে একাধিক অভিযোগে জানা যায়, বর্তমান রেঞ্জার হারুন অর রশিদ ভারপ্রাপাপ্ত রেঞ্জার হিসেবে ভালুকার উথুরা রেঞ্জে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে রেঞ্জার রইচ উদ্দিনকে অন্য ডিবিশনে বদলী করা হলে সুকৌশলে এবং তদবির করে তিনি ভালুকা রেঞ্জের দায়িত্ব পান। এদিকে তার ছেলে সংবাদ সংস্থা বাসস এ চাকরী করার কথা বলে তিনি ভালুকায় কর্মরত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন জনকে প্রায়ই মামলাসহ নানা ধরনের হুমকী দিয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে ভালুকা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকা উপজেলার যেকোন স্থানে গাছ বা লাকড়ি বোঝাই ট্রাক আটকানোর মতা রাখে স্থানীয় বনবিভাগ। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, রোববার সন্ধ্যায় লাকরিসহ ট্রাক জব্দ করার কথা স্বীকার করেন।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আব্দুল ওয়াদুদ জানান, লাকড়িসহ বন বিভাগ ট্রাক আটক করলেও ট্রাক, গাড়ি চালক ও হেলপারকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে লাকড়ি আটক আছে। তবে টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই। এঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। টাকা নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *