আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ॥ ৫ আশ্বিন, ১৪৩১ ॥ ১৬ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

সরকার পতনের ভয় আওয়ামী লীগকে দেখিয়ে লাভ নেই: প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় রাজনীতি

সরকার পতনের ভয় আওয়ামী লীগকে দেখিয়ে লাভ নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধি:
অক্টো ২৮, ২০২৩

বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকে বিএনপি সরকারের পতন ঘটাবে, নানা রকম আন্দোলনের হুমকি দেয়। একটি কথা স্পষ্ট বলতে চাই। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। ওই সমস্ত ভয়ভীতি আওয়ামী লীগকে দেখিয়ে কোনও লাভ নেই। বরং খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল বলেই ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে হটিয়েছিল। এটা তাদের মনে রাখা উচিত।’
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড় আনোয়ারা কেইপিজেড মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা ভোট চোর। জনগণের অর্থ চোর। ওরা খুনি। বিএনপি-জামায়াত মানেই হচ্ছে খুনি-হত্যাকারী, সন্ত্রাসী। জঙ্গিবাদী বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে। উন্নয়নে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। এই টানেল পেয়েছেন। আজকের উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা আজকে ওয়াদা করেন আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে। লুটেরা সন্ত্রাসীদের হাতে যেন দেশ না পড়ে। বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায় রাখতে পারেব না।’
টানেলের নির্মাণকাজ সময়মতো সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছি। আমরা কর্ণফুলীর নদীর তলে টানেল করে দিয়েছি। এই টানেলের ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে সময় কম লাগবে। এই টানেল এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।
তিনি বলেন, ‘নৌকা মার্কায় গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন বলেই এই উন্নয়নটা হয়েছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনারা স্বাধীনতা পেয়েছেন। এই নৌকা মার্কার সরকার যখনই এসেছে দেশের উন্নতি হয়েছে। গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামে যে উন্নতি করেছি। আমরা আঞ্চলিকভাবে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার যাতে হয় সেই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা অনেক কাজ করেছি তা বলে শেষ করা যাবে না। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন করি আর ওই বিএনপি-জামায়াত ধ্বংস করে। আগুন দিয়ে জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার ইতিহাস তাদের। জাতির পিতাকে হত্যার সঙ্গে ওই জিয়াউর রহমানসহ সকলেই জড়িত ছিল। এরা খুন করা ছাড়া আর কিছু জানে না। ওরা ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি লুটপাট করে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপির কাজ হচ্ছে মানুষ খুন করা। দুর্নীতি ও লুটপাট করা। খালেদা জিয়া এতিমদের টাকা ব্যাংকে না রেখে নিজের কাছে রেখে আজকে সাজাপ্রাপ্ত। আর ছেলে তারেক রহমান বিদেশে পালিয়ে আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে বেগে গিয়েছিল। আর কোটি কোটি টাকা মানিলন্ডারিং করেছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।’
এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা পৌনে ১টার দিকে জনসভাস্থলে পৌঁছান। এখানে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধনী পর্বের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। আনোয়ারা প্রান্তে জনসভার আগে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) উপহার দেন। টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের শুভেচ্ছাবার্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে বার্তাটির ইংরেজি ও বাংলা ভার্সন পাঠ করে শোনানো হয়।
বঙ্গবন্ধু টানেল ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেল উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট ও ৫০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট অবমুক্ত করেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হেসেন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *