আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ॥ ৫ আশ্বিন, ১৪৩১ ॥ ১৬ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

বাগেরহাটে সুপারির বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
জাতীয়

বাগেরহাটে সুপারির বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা

প্রতিনিধি:
অক্টো ২৪, ২০২৩
বাগেরহাট
বাগেরহাটের সুপারির বাম্পার ফল হলেও দাম পাচ্ছেন না কৃষক। প্রত্যেক হাটে সক্রিয় রয়েছে সিন্ডিকেট। তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হচ্ছে সিন্ডিকেট। গেল বছর এক কুড়ি (২৩১টি) সুপারি ৮০০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার সেই সুপারির দাম নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। গত বছরের তুলনায় দাম অর্ধেকে নেমে আসায় হতাশ কৃষক।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটে সুপারির বাগান রয়েছে ৩৯৬০ হেক্টর জমিতে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সুপারির উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ১২৩ টন। এ বছর তার থেকে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফলন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই বাজারে দাম বেশি থাকলেও কয়েক সপ্তাহ পর থেকে কমতে থাকে সুপারির দাম। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুপারি কিনে বাইরে পাঠাতে থাকে তারা। তাই বাজারে সুপারির অনুপাতে বাইরের ক্রেতা কম। এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাধাল, কচুয়া, মাজারসহ বড় বড় হাটে না আসায় কম দামে বাধ্য হয়ে স্থানীয় পাইকারদের কাছে সুপারি বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষককে।
কচুয়া উপজেলার সাংদিয়া গ্রামের গ্রামের সুপারিচাষি আবুল হোসেন খান জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সুপারির দাম অনেক কম। বাজারে আসছেন না বাইরের পাইকাররা। স্থানীয়রা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুপারি বিক্রি করছেন। যার ফলে খুব অল্প দামে বিক্রি করতে হচ্ছে সুপারি। যে সুপারি গত বছর ৮০০ টাকা কুড়ি ছিল এ বছর সেই সুপারি এখন ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা। কেউই বেশি দাম বলেন না। নিশ্চিতভাবে বলতে পারি সিন্ডিকেট কাজ করছে সুপারির হাটগুলোতে।
একই গ্রামের আরেক কৃষক ভাস্কর ব্যানার্জি জানান, একটি গাছ থেকে একছড়া সুপারি পেড়ে আনতে দশ টাকা দিতে হয়। তারপর ছড়া থেকে সুপারি ছাড়ানো, গণনা করা, হাটে নেওয়াও অনেক খরচ। তারপর যদি ৮০০ টাকার সুপারি ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করতে হয় সেটা খুব দুঃখজনক। আমরা হতাশ, কি করবো জানি না। কোনো ব্যবসায়ী বেশি দাম বলেন না। আমাদের মনে হয়, সিন্ডিকেট কাজ করছে। কচুয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় সুপারি ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র বাওয়ালি বলেন, আমরা সুপারি কিনে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাই। ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত সুপারি কিনছি। শহিদ খান নামে আরএক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে সুপারি আমদানি বেশি তাই দাম কম। আমরা তো কোনো সিন্ডিকেট দেখছি না।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জানান, বাগেরহাটে ৩৯৬০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৬ হাজার ১৩৩ টন সুপারি উৎপাদিত হয়েছে। আশা করি গত বছরের থেকে এ বছর আরো সুপারি উৎপাদন বেশি হবে। তবে দাম ও সিন্ডিকেটের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি এই কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *